Description
ভিয়েতনাম বারোমাসি মাল্টা: পরিচিতি, চাষ পদ্ধতি ও পরিচর্যা
পরিচিতি
ভিয়েতনাম বারোমাসি মাল্টা একটি উচ্চ ফলনশীল ও সুস্বাদু সাইট্রাস ফল। এটি মূলত ভিয়েতনাম থেকে উদ্ভূত, তবে বর্তমানে বাংলাদেশ, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই জাতের মাল্টা বারোমাসি (বছরের সব সময় ফল দেয়) বলে এটি বাণিজ্যিক চাষের জন্য অত্যন্ত লাভজনক।
গাছের বৈশিষ্ট্য
- উচ্চতা: গাছ ২-৪ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
- পাতা: গাঢ় সবুজ, চকচকে ও মাঝারি আকারের।
- ফুল: সুগন্ধযুক্ত, সাদা রঙের।
- ফল: মাঝারি আকারের, খোসা পাতলা, রসালো ও মিষ্টি স্বাদের।
- ফলন: গাছ সারা বছর ফল দেয়, বিশেষ করে ৩-৪ মাস পরপর ফল সংগ্রহ করা যায়।
ভিয়েতনাম বারোমাসি মাল্টার উপকারিতা
১. পুষ্টিগুণ
- এতে প্রচুর ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার, পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম রয়েছে।
২. স্বাস্থ্য উপকারিতা
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: ভিটামিন সি শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে।
- হজমশক্তি উন্নত করে: এতে থাকা ফাইবার হজমে সাহায্য করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- হার্টের জন্য ভালো: এতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক উজ্জ্বল ও চুল স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: প্রাকৃতিক চিনি রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
ভিয়েতনাম বারোমাসি মাল্টা চাষ ও পরিচর্যা
১. চারা রোপণের উপযুক্ত সময়
-
- যেকোনো সময় গাছ লাগানো যায়।
- তবে নিয়মিত পানি দিতে হবে।
- টবে বা মাঠে লাগানো যায়।
২. মাটি ও আবহাওয়া
- বেলে-দোআঁশ বা দোআঁশ মাটি ভালো।
- pH ৫.৫-৬.৫ এর মধ্যে থাকা উর্বর মাটি আদর্শ।
- প্রচুর রোদ ও হালকা ছায়াযুক্ত স্থান গাছের বৃদ্ধির জন্য ভালো।
৩. চারা রোপণ পদ্ধতি
- কলম বা গ্রাফটিং পদ্ধতি বেশি জনপ্রিয়, কারণ এতে গাছ দ্রুত ফল দিতে শুরু করে।
- চারা রোপণের দূরত্ব:
- গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ৩-৪ মিটার রাখা উচিত।
- সারির মধ্যে ৪-৫ মিটার ফাঁকা রাখা ভালো।
- গর্ত তৈরি ও সার প্রয়োগ
- গর্তের আকার: ৫০×৫০×৫০ সেমি।
- গর্তে সার মিশিয়ে রাখা: ৫ কেজি গোবর সার, ২০০ গ্রাম টিএসপি ও ১০০ গ্রাম এমওপি সার গর্তে মিশিয়ে ৭-১০ দিন রেখে দিতে হবে।
৪. সেচ ও পানি সরবরাহ
- গাছের চারপাশে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা বজায় রাখতে হবে।
- শুকনো মৌসুমে সপ্তাহে ২-৩ বার পানি দিতে হবে।
- বর্ষার সময় পানি জমে থাকলে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. সার প্রয়োগ
- প্রতি ৩ মাস অন্তর জৈব সার (কম্পোস্ট/গোবর সার) প্রয়োগ করা ভালো।
- রাসায়নিক সার প্রয়োগ করলে:
- ইউরিয়া: ২০০-৩০০ গ্রাম/গাছ
- টিএসপি: ১৫০-২০০ গ্রাম/গাছ
- এমওপি: ২০০-২৫০ গ্রাম/গাছ
- সালফার ও ম্যাগনেসিয়াম প্রতি ৬ মাস অন্তর স্প্রে করলে ফলের মান ভালো হয়।
৬. রোগবালাই ও প্রতিরোধ
- সাইট্রাস ক্যানকার: পাতায় দাগ পড়লে তামা ভিত্তিক ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে।
- থ্রিপস ও এফিড আক্রমণ: কীটনাশক বা নিম তেল স্প্রে করলে পোকা দমন করা যায়।
- শিকড় পচা রোগ: অতিরিক্ত পানি জমলে এ সমস্যা হয়, তাই নিষ্কাশন ব্যবস্থা ঠিক রাখতে হবে।
ফল সংগ্রহ ও ব্যবহার
- চারা লাগানোর ১.৫-২ বছর পর ফল আসতে শুরু করে।
- সারা বছর ফল ধরে বলে বছরে ৩-৪ বার ফল সংগ্রহ করা সম্ভব।
- মাল্টা কাঁচা ও পাকা দুইভাবেই খাওয়া যায়।
- এটি জুস, স্মুদি, সালাদ, ডেজার্ট ও কেক তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
উপসংহার
ভিয়েতনাম বারোমাসি মাল্টা একটি লাভজনক ও পুষ্টিকর ফল। এটি সহজ পরিচর্যায় দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং সারা বছর ফলন দেয়। যারা বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ করতে চান, তাদের জন্য এটি একটি চমৎকার বিকল্প।
Know More Details Just Call- 01861543144
Got Nursery Related Tips and Trikes Please Join Our Facebook Group
Reviews
There are no reviews yet.