Description
Thai Jamrul Fruit Plant
জামরুল ফলের উপকারিতা, গাছ লাগানোর নিয়ম ও পরিচর্যা
জামরুল (Syzygium samarangense) দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি জনপ্রিয় ফল, যা ইংরেজিতে “Wax Apple” বা “Java Apple” নামে পরিচিত। এটি রসালো, খাস্তা ও মিষ্টি স্বাদের হয়। জামরুল সাধারণত গোলাপি, সাদা, সবুজ বা লালচে বর্ণের হয়ে থাকে। গাছটি দ্রুতবর্ধনশীল, দীর্ঘজীবী এবং কম যত্নেই ফলন দেয়।
উপকারিতা
১. শরীরকে হাইড্রেট রাখে
জামরুলে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে, যা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং গরমের দিনে ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
এতে থাকা ভিটামিন C ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
৩. হজমশক্তি উন্নত করে
জামরুলে থাকা ফাইবার হজমশক্তি উন্নত করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং গ্যাস্ট্রিক কমাতে সহায়তা করে।
৪. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
এই ফলে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
৫. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
জামরুলে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
৬. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে
ভিটামিন C ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে জামরুল ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে।
৭. কিডনির কার্যকারিতা ভালো রাখে
জামরুল প্রাকৃতিকভাবে ডাইইউরেটিক (প্রস্রাব বৃদ্ধিকারী) হিসেবে কাজ করে, যা কিডনির কার্যকারিতা ভালো রাখতে সাহায্য করে।
জামরুল গাছ লাগানোর নিয়ম
১. মাটির ধরন ও প্রস্তুতি
দোআঁশ ও বেলে-দোআঁশ মাটি জামরুল চাষের জন্য আদর্শ।
মাটির pH ৫.৫-৭.০ হলে গাছ ভালোভাবে বেড়ে ওঠে।
আগাছা পরিষ্কার করে জমি প্রস্তুত করতে হবে।
২. চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়
বর্ষাকাল (জুলাই-আগস্ট) ও বসন্তকাল (মার্চ-এপ্রিল) চারা লাগানোর জন্য সবচেয়ে ভালো সময়।
শীতকালে লাগানো হলে চারা নিয়মিত পানি দিতে হবে।
৩. চারা লাগানোর নিয়ম
বীজ, কলম বা কাটিং পদ্ধতিতে জামরুলের চারা তৈরি করা যায়, তবে কলমের চারা দ্রুত ফলন দেয়।
চারা রোপণের জন্য ২-৩ ফুট গভীর ও ৩-৪ ফুট প্রশস্ত গর্ত তৈরি করতে হবে।
প্রতি গর্তে কম্পোস্ট, গোবর সার ও জৈব সার মিশিয়ে মাটি প্রস্তুত করতে হবে।
গাছের পর্যাপ্ত বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে প্রতিটি গাছের মধ্যে ১৫-২০ ফুট দূরত্ব রাখতে হবে।
জামরুল গাছের পরিচর্যা
১. পানি দেওয়া
প্রথম ৩-৪ মাস সপ্তাহে ২-৩ বার পানি দিতে হবে।
গ্রীষ্মকালে বেশি পানি দেওয়া দরকার, তবে অতিরিক্ত পানি জমতে দেওয়া যাবে না।
বর্ষাকালে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতই যথেষ্ট, তবে অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
২. সার প্রয়োগ
বছরে ৩-৪ বার জৈব সার ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা উচিত।
ফল আসার আগে বেশি নাইট্রোজেন সার না দেওয়া ভালো, এতে গাছ বেশি পাতা গজাবে কিন্তু কম ফল দেবে।
প্রতি গাছে বছরে ৩ বার নিম্নলিখিত সার প্রয়োগ করা উচিত—
জৈব সার: কম্পোস্ট, গোবর সার
রাসায়নিক সার: ইউরিয়া (১০০-১৫০ গ্রাম), টিএসপি (২০০-৩০০ গ্রাম), পটাশ (২০০-৩০০ গ্রাম)
৩. গাছ ছাঁটাই
নতুন শাখা গজানোর জন্য বছরে একবার পুরনো ও মরা ডাল ছাঁটাই করা উচিত।
ছাঁটাই করলে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয় এবং ফলন বেশি হয়।
৪. রোগ ও পোকামাকড় দমন
ফল পচা রোগ: ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করলে প্রতিরোধ করা যায়।
পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ: কীটনাশক বা জৈবিক স্প্রে (নিম তেল, রসুনের নির্যাস) ব্যবহার করা যেতে পারে।
শুকনো পাতা ও মরা ডাল নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে, যাতে ছত্রাক ও রোগের সংক্রমণ না হয়।
ফল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ
জামরুল ফুল আসার ২-৩ মাস পর ফল সংগ্রহ করা যায়।
ফল যখন সম্পূর্ণ সবুজ থেকে লাল বা গোলাপি হয়ে যায় এবং হালকা নরম হয়, তখন এটি সংগ্রহ করতে হয়।
জামরুল বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না, তবে ফ্রিজে ২-৩ দিন ভালো থাকে।
জামরুল দিয়ে জুস, আচার ও সালাদ তৈরি করা যায়।
উপসংহার
জামরুল একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল, যা সহজেই বাগানে বা বাড়ির আঙিনায় চাষ করা যায়। এটি দ্রুত বর্ধনশীল গাছ এবং কম যত্নেই প্রচুর ফল দেয়। সঠিক পরিচর্যা করলে জামরুল গাছ থেকে ১৫-৩০ বছর ধরে ফল পাওয়া সম্ভব। এটি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং বাণিজ্যিকভাবেও লাভজনক একটি ফল।
Know More Details Just Call- 01861543144
Got Nursery Related Tips and Trikes Please Join Our Facebook Group
Reviews
There are no reviews yet.