Description
পিনাট বাটার ফল (Peanut Butter Fruit): পরিচিতি, চাষ ও পরিচর্যা
পিনাট বাটার ফলের পরিচিতি
পিনাট বাটার ফল (Bunchosia argentea বা Bunchosia armeniaca) হলো একধরনের ছোট, সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল, যার স্বাদ ও গন্ধ অনেকটা পিনাট বাটারের মতো। এটি একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও উপক্রান্তীয় ফল, যা প্রধানত দক্ষিণ আমেরিকায় জনপ্রিয়।(Peanut Butter)
- বৈজ্ঞানিক নাম: Bunchosia argentea
- পরিবার: Malpighiaceae
- উৎপত্তি: এটি মূলত ব্রাজিল, কলম্বিয়া, পেরু ও ভেনিজুয়েলায় পাওয়া যায়, তবে বর্তমানে অন্যান্য উষ্ণ অঞ্চলেও এটি চাষ হচ্ছে।
- আকার ও রঙ: ফল ছোট, ডিম্বাকৃতির এবং পাকলে উজ্জ্বল লাল-কমলা রঙের হয়।
- স্বাদ: এর স্বাদ মিষ্টি এবং টেক্সচার মসৃণ, যা অনেকটা চিনাবাদামের মাখনের মতো।
পিনাট বাটার ফলের উপকারিতা
এই ফল পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এর কিছু প্রধান উপকারিতা নিম্নরূপ—
- উচ্চ পুষ্টিমান – এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এ, সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।
- শক্তি বৃদ্ধি করে – প্রাকৃতিক চিনি ও স্বাস্থ্যকর চর্বি থাকায় এটি তাৎক্ষণিক শক্তি যোগায়।
- হজমে সহায়তা করে – এতে থাকা ফাইবার হজমশক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী – ভিটামিন এ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক উজ্জ্বল করে এবং চুল মজবুত রাখে।
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় – এতে থাকা স্বাস্থ্যকর চর্বি ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস হৃদযন্ত্রের সুস্থতায় সাহায্য করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় – ভিটামিন সি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
পিনাট বাটার গাছ লাগানোর নিয়ম
পিনাট বাটার গাছ সাধারণত উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় ভালোভাবে জন্মে। এটি বেশ সহজেই চাষযোগ্য এবং সামান্য পরিচর্যাতেই ফলন দেয়।
১. মাটির ধরন
- দোআঁশ বা বেলে-দোআঁশ মাটি এই গাছের জন্য উপযুক্ত।
- মাটির pH ৬.০-৭.৫ এর মধ্যে থাকা ভালো।
- পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভালো থাকতে হবে।
২. বীজ বা চারা রোপণ
- পিনাট বাটার গাছ সাধারণত বীজ থেকে সহজেই জন্মে।
- বীজ থেকে চারা বের হতে ২-৪ সপ্তাহ সময় লাগে।
- কলম বা গ্রাফটিং করেও চাষ করা যায়, যা দ্রুত ফলন দেয়।
-
- যেকোনো সময় গাছ লাগানো যায়।
- তবে নিয়মিত পানি দিতে হবে।
- টবে বা মাঠে লাগানো যায়।
- ১০-১২ ফুট দূরত্বে গাছ লাগাতে হবে, যেন পর্যাপ্ত আলো ও বাতাস পায়।
৩. সেচ ব্যবস্থাপনা
- নিয়মিত সেচ দিতে হবে, তবে অতিরিক্ত পানি যেন না জমে।
- শুষ্ক মৌসুমে প্রতি সপ্তাহে ২-৩ বার পানি দেওয়া ভালো।
- বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. সার প্রয়োগ
- প্রতি বছর জৈব সার (কম্পোস্ট বা গোবর সার) ৫-১০ কেজি দিতে হবে।
- প্রতি ৩ মাস অন্তর ইউরিয়া, টিএসপি ও পটাশ সার দিতে হবে (উদাহরণস্বরূপ, ১০০-২০০ গ্রাম ইউরিয়া, ১৫০ গ্রাম টিএসপি, ১০০ গ্রাম পটাশ)।
পিনাট বাটার গাছের পরিচর্যা
গাছের দ্রুত বৃদ্ধি ও ভালো ফলন পেতে নিয়মিত পরিচর্যা করা প্রয়োজন।
১. ছাঁটাই ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা
- গাছের পুরনো ও মরা ডালপালা ছেঁটে দিলে নতুন ডাল গজায় এবং ফলন ভালো হয়।
- গাছের চারপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে, যাতে রোগবালাই না ছড়ায়।
২. রোগবালাই ও পোকামাকড় দমন
- গাছে সাধারণত অ্যাফিড, মিলিবাগ ও ছত্রাকজনিত রোগ দেখা দিতে পারে।
- জৈব কীটনাশক বা নিম তেল ব্যবহার করে পোকামাকড় দমন করা যায়।
- ছত্রাক প্রতিরোধে ভালো বায়ু চলাচল নিশ্চিত করতে হবে।
৩. পরাগায়ন ও ফল ধরানো
- মৌমাছি ও অন্যান্য পরাগায়নকারী পোকামাকড় এই গাছের পরাগায়নে সাহায্য করে।
- ফুল ও ফলের সংখ্যা বাড়াতে মাঝে মাঝে জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে।
৪. ফল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ
- ফুল আসার ৪-৫ মাস পর ফল পাকে।
- ফল যখন উজ্জ্বল লাল বা কমলা রঙের হয়, তখন সংগ্রহ করতে হবে।
- পাকা ফল সংরক্ষণ করা কঠিন, তাই দ্রুত খাওয়া বা প্রক্রিয়াজাত করা ভালো।
উপসংহার
পিনাট বাটার ফল একটি সুস্বাদু, স্বাস্থ্যকর এবং সহজে চাষযোগ্য ফল। সঠিক পরিচর্যা ও যত্ন নিলে এটি দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং ভালো ফলন দেয়। এটি খাওয়া ছাড়াও জ্যাম, স্মুদি এবং মিষ্টান্ন তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। তাই, বাণিজ্যিক ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে চাষের জন্য এটি একটি চমৎকার বিকল্প হতে পারে।
Know More Details Just Call- 01861543144
Got Nursery Related Tips and Trikes Please Join Our Facebook Group
Reviews
There are no reviews yet.