Description
Red Tree Guava Malaysian
লাল পেয়ারা: উপকারিতা, চাষের নিয়ম ও পরিচর্যা
লাল পেয়ারা সাধারণ পেয়ারার তুলনায় বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন, সুস্বাদু এবং আকর্ষণীয় দেখতে। এটি সাধারণত গোলাপি বা লালচে রঙের হয় এবং এতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন C থাকে। বাংলাদেশে এটি ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এবং বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য সম্ভাবনাময় একটি ফল।
১. লাল পেয়ারার উপকারিতা
স্বাস্থ্যগত উপকারিতা:
উচ্চ পুষ্টিগুণ: এতে প্রচুর ভিটামিন C, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, লাইকোপিন, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম রয়েছে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: উচ্চমাত্রার ভিটামিন C শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে।
হৃদরোগ প্রতিরোধ: এতে থাকা লাইকোপিন ও পটাশিয়াম রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকায় এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
ওজন কমাতে সহায়ক: উচ্চ ফাইবার থাকার কারণে এটি হজমে সহায়তা করে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে।
ত্বক ও চুলের যত্ন: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার ফলে এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং চুলের গঠন মজবুত করে।
অর্থনৈতিক উপকারিতা:
উচ্চ ফলনশীল: এটি সাধারণত বছরে দুইবার ফল দেয়, যা কৃষকদের জন্য লাভজনক।
বাজারদর ভালো: সাধারণ পেয়ারার তুলনায় লাল পেয়ারার চাহিদা ও মূল্য বেশি।
দ্রুত বিকাশ ঘটে: গাছ দ্রুত বড় হয় এবং ফলন দিতে শুরু করে।
রপ্তানি সম্ভাবনা: উন্নতমানের পেয়ারা বিদেশে রপ্তানির সুযোগ রয়েছে।
২. লাল পেয়ারা গাছ লাগানোর নিয়ম
ক) উপযুক্ত মাটি ও জলবায়ু
দোআঁশ বা বেলে-দোআঁশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী।
মাটির pH ৫.৫-৬.৫ হলে ফলন ভালো হয়।
গাছ পর্যাপ্ত সূর্যালোক পেলে ভালো ফলন দেয়।
উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু উপযোগী (২০-৩৫°C)।
খ) চারা রোপণের উপযুক্ত সময়
বর্ষাকাল (জুন-আগস্ট) এবং শীতের শুরুতে (অক্টোবর-নভেম্বর) রোপণ করা উত্তম।
গ) চারা রোপণের পদ্ধতি
গর্ত তৈরি:
গর্তের মাপ: ২-৩ ফুট গভীর ও ২-৩ ফুট চওড়া।
সার প্রয়োগ:
১০-১৫ কেজি পচা গোবর সার
২০০-৩০০ গ্রাম টিএসপি
২০০-২৫০ গ্রাম এমওপি
চারা বসানো:
সুস্থ ও রোগমুক্ত চারা নির্বাচন করুন।
চারার গোড়া মাটির সমান রেখে গর্তে বসিয়ে চারপাশের মাটি চেপে দিন।
দূরত্ব:
গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ৮-১২ ফুট রাখা উচিত।
৩. লাল পেয়ারা গাছের পরিচর্যা
ক) পানি সেচ
গ্রীষ্মকালে ১০-১৫ দিন অন্তর সেচ দিতে হবে।
বর্ষার সময় অতিরিক্ত পানি জমে গেলে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
ফুল ও ফল ধরার সময় নিয়মিত পানি সরবরাহ করা দরকার।
খ) সার ব্যবস্থাপনা
প্রতি বছর সার প্রয়োগ করুন:
গোবর সার: ১৫-২০ কেজি
ইউরিয়া: ৩০০-৪০০ গ্রাম
টিএসপি: ২৫০-৩০০ গ্রাম
এমওপি: ২০০-২৫০ গ্রাম
সার প্রয়োগের সময়:
চারা রোপণের ১ মাস পর প্রথমবার সার দিন।
প্রতি ৩ মাস অন্তর সার প্রয়োগ করুন।
ফল ধরার আগে ও পরে অতিরিক্ত পটাশ সার দিলে ফলন ভালো হয়।
গ) রোগবালাই ও প্রতিকার
পাউডারি মিলডিউ (পাতা পচা রোগ):
প্রতি ১৫ দিন অন্তর ছত্রাকনাশক স্প্রে করুন (স্যান্ডোভিট বা ক্যাপটান ২ গ্রাম/লিটার)।
ফল ছিদ্রকারী পোকা:
প্রতি ১০-১৫ দিন অন্তর ৫ মিলি ডেসিস বা সাইপারমেথ্রিন ১ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে স্প্রে করুন।
ফলপচা রোগ:
গাছের নিচে পড়ে থাকা পচা ফল অপসারণ করুন এবং প্রয়োজন হলে বর্ডো মিশ্রণ (১%) স্প্রে করুন।
ঘ) গাছের পরিচর্যা ও ছাঁটাই
গাছের মাঝখান খালি রেখে ডালপালা ছাঁটাই করলে গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
অতিরিক্ত ফল ধরলে পাতলা করে দিতে হবে, যাতে গাছ বেশি ভারী না হয়।
গাছের গোড়ায় আগাছা পরিষ্কার রাখা দরকার।
৪. লাল পেয়ারা সংগ্রহ ও সংরক্ষণ
চারা রোপণের ২-৩ বছরের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে।
সাধারণত বছরে দুইবার (মার্চ-এপ্রিল এবং আগস্ট-সেপ্টেম্বর) ফল সংগ্রহ করা যায়।
পরিপক্ক হলে ফলের খোসা সবুজ থেকে লালচে বা গোলাপি হয়ে যায়।
ফল সংগ্রহের পর ঠান্ডা ও ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে।
বাজারজাত করার জন্য ফল পরিষ্কার করে ঝুড়িতে সংরক্ষণ করা ভালো।
উপসংহার
লাল পেয়ারা একটি উচ্চমূল্যবান, পুষ্টিকর এবং বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক ফল। সঠিক পরিচর্যা, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও সার ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করলে কৃষকরা বাম্পার ফলন পেতে পারেন। এটি শুধুমাত্র স্থানীয় বাজারেই নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও চাহিদা রয়েছে।
আপনি কি লাল পেয়ারা চাষ করতে চান? অথবা কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে আরও জানতে চান? আমাকে জানান!
Know More Details Just Call- 01861543144
Got Nursery Related Tips and Trikes Please Join Our Facebook Group
Reviews
There are no reviews yet.