Description
Thai Longan
থাই লংগান ফলের উপকারিতা, গাছ রোপণের নিয়ম ও পরিচর্যা
থাই লংগান (Dimocarpus longan) লিচু জাতীয় একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল, যা মূলত থাইল্যান্ড, চীন, ভিয়েতনাম ও অন্যান্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশে জনপ্রিয়। বাংলাদেশেও লংগান ফলের চাষ ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এটি মিষ্টি ও রসালো হওয়ায় কাঁচা খাওয়া যায়, পাশাপাশি জুস, ড্রাই ফ্রুট ও ডেজার্ট তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
উপকারিতা
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
লংগানে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন C থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং বিভিন্ন সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
২. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে
এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের বয়সের ছাপ কমায় এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে।
৩. স্নায়ুবিক শক্তি বৃদ্ধি করে
লংগানে আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম থাকায় এটি নার্ভ সিস্টেমকে শক্তিশালী করে এবং মানসিক চাপ কমায়।
৪. হজমশক্তি উন্নত করে
এতে থাকা ডায়েটারি ফাইবার হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
৫. রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে
লংগানে প্রচুর আয়রন থাকায় এটি রক্তশূন্যতা দূর করে এবং শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ায়।
৬. হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
লংগান উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রেখে হার্টকে সুস্থ রাখে।
৭. হাড় মজবুত করে
এর মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ম্যাগনেশিয়াম হাড়কে শক্তিশালী করে এবং অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করে।
থাই লংগান গাছ রোপণের নিয়ম
১. মাটির ধরন ও প্রস্তুতি
লংগান গাছ দোআঁশ, বেলে-দোআঁশ বা উর্বর মাটিতে ভালো জন্মায়।
মাটির pH ৫.৫-৬.৫ হলে গাছ ভালোভাবে বেড়ে ওঠে।
জমি ভালোভাবে চাষ করে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
২. চারা রোপণের উপযুক্ত সময়
যেকোনো সময় গাছ লাগানো যায়। শীতকালে (নভেম্বর-ডিসেম্বর)ও লাগানো যায়, তবে নিয়মিত পানি দিতে হবে।
৩. চারা লাগানোর নিয়ম
বীজ, কলম বা কাটিং পদ্ধতিতে লংগানের চারা তৈরি করা যায়, তবে কলমের চারা সবচেয়ে ভালো ফল দেয়।
চারা রোপণের জন্য ২-৩ ফুট গভীর এবং ৩-৪ ফুট প্রশস্ত গর্ত তৈরি করতে হবে।
প্রতি গর্তে গোবর সার, কম্পোস্ট ও জৈব সার মিশিয়ে মাটি প্রস্তুত করতে হবে।
এক গাছ থেকে অন্য গাছের দূরত্ব ১৫-২০ ফুট রাখা উচিত, যাতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস পায়।
থাই লংগান গাছের পরিচর্যা
১. পানি দেওয়া
প্রথম তিন মাস সপ্তাহে ২-৩ বার পানি দিতে হবে।
গ্রীষ্মকালে বেশি পানি দিতে হয়, তবে অতিরিক্ত পানি জমতে দেওয়া যাবে না।
বর্ষাকালে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতই যথেষ্ট, তবে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে গাছের গোড়ার পানি বের করার ব্যবস্থা করতে হবে।
২. সার প্রয়োগ
প্রতি ৩-৪ মাস অন্তর জৈব সার ও রাসায়নিক সার দিতে হবে।
প্রতি গাছে বছরে ৩ বার নিম্নলিখিত সার প্রয়োগ করা উচিত—
জৈব সার: কম্পোস্ট, গোবর সার
রাসায়নিক সার: ইউরিয়া (১০০-১৫০ গ্রাম), টিএসপি (২০০-৩০০ গ্রাম), পটাশ (২০০-৩০০ গ্রাম)
৩. গাছ ছাঁটাই
গাছের শক্তিশালী ও সুষম বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে ছাঁটাই করা দরকার।
পুরনো ও শুকনো ডাল কেটে দিতে হবে, যাতে নতুন শাখা বের হয় এবং ফলন বৃদ্ধি পায়।
ফুল আসার পর অতিরিক্ত ডালপালা ছাঁটাই করা উচিত না, কারণ এটি ফলন কমাতে পারে।
৪. রোগ ও পোকামাকড় দমন
ফল পচা রোগ: ছত্রাকনাশক স্প্রে করলে প্রতিরোধ করা যায়।
পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ: কীটনাশক বা জৈবিক স্প্রে (নিম তেল, রসুনের নির্যাস) ব্যবহার করতে হবে।
শুকনো পাতা ও মরা ডাল নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে, যাতে ছত্রাক ও রোগের সংক্রমণ না হয়।
ফল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ
ফুল আসার ৪-৫ মাস পর ফল সংগ্রহ করা যায়।
ফল যখন হালকা বাদামি রঙের হয় এবং চামড়া কিছুটা নরম হয়, তখন এটি সংগ্রহ করতে হয়।
লংগান ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যায়, এবং এটি ড্রাই ফ্রুট হিসেবেও সংরক্ষণ করা সম্ভব।
উপসংহার
থাই লংগান একটি সুস্বাদু, স্বাস্থ্যকর এবং বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক ফল। এটি সহজেই চাষ করা যায় এবং এর গাছ দীর্ঘদিন ধরে ফল দেয়। সঠিক পরিচর্যা করলে প্রতি গাছ থেকে ১৫-৩০ কেজি ফল পাওয়া সম্ভব। বাড়ির বাগান বা বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য লংগান একটি চমৎকার ফল।
Know More Details Just Call- 01861543144
Got Nursery Related Tips and Trikes Please Join Our Facebook Group
Reviews
There are no reviews yet.