Description
Yellow Malta Plant
হলুদ মাল্টা: পরিচিতি, চাষ পদ্ধতি ও পরিচর্যা
পরিচিতি
হলুদ মাল্টা (Yellow Sweet Orange) মূলত সাইট্রাস জাতীয় একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল। এটি সাধারণত উজ্জ্বল হলুদ রঙের হয় এবং স্বাদে কিছুটা মিষ্টি ও টক-মিষ্টি ধরনের। অন্যান্য কমলা বা মাল্টার তুলনায় এর খোসা পাতলা ও সহজে ছড়ানো যায়।Yellow Malta Plant
এই জাতটি সাধারণত গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলিতে জন্মে এবং বাংলাদেশ, ভারত, চীন, থাইল্যান্ড ও ব্রাজিলে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়। এটি বাণিজ্যিকভাবে অত্যন্ত লাভজনক কারণ ফলন বেশি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো।
হলুদ মাল্টার গাছের বৈশিষ্ট্য
উচ্চতা: গাছ ৩-৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
পাতা: গাঢ় সবুজ, মাঝারি আকারের, কিছুটা চকচকে।
ফুল: সুগন্ধযুক্ত, ছোট সাদা রঙের।
ফল: মাঝারি আকারের, খোসা পাতলা, রসালো এবং টক-মিষ্টি স্বাদের।
ফলন: বছরে ১-২ বার ফল আসে, তবে কিছু জাত বারোমাসি হতে পারে।
হলুদ মাল্টার উপকারিতা
১. পুষ্টিগুণ
হলুদ মাল্টায় প্রচুর ভিটামিন সি, ফাইবার, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফ্ল্যাভোনয়েড রয়েছে।
২. স্বাস্থ্য উপকারিতা
ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে: ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
হজমের জন্য উপকারী: এতে থাকা ফাইবার হজমশক্তি বাড়ায় ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: এতে থাকা পটাশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তচাপ ঠিক রাখে।
ওজন কমাতে সহায়ক: ফাইবার বেশি থাকায় এটি ক্ষুধা কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
ত্বক ও চুলের জন্য ভালো: ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক উজ্জ্বল রাখে ও চুল মজবুত করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে: এতে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
হলুদ মাল্টা গাছ লাগানোর নিয়ম ও পরিচর্যা
১. চারা রোপণের উপযুক্ত সময়
- যেকোনো সময় গাছ লাগানো যায়।
- তবে নিয়মিত পানি দিতে হবে।
- টবে বা মাঠে লাগানো যায়।
২. মাটি ও আবহাওয়া
বেলে-দোআঁশ বা দোআঁশ মাটি ভালো।
pH ৫.৫-৭.৫ এর মধ্যে থাকা উর্বর মাটি উপযুক্ত।
প্রচুর রোদ ও হালকা ছায়াযুক্ত স্থান গাছের বৃদ্ধির জন্য ভালো।
পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকা দরকার, কারণ মাল্টা গাছ অতিরিক্ত পানি সহ্য করতে পারে না।
৩. চারা রোপণ পদ্ধতি
কলম বা গ্রাফটিং পদ্ধতি বেশি জনপ্রিয়, কারণ এতে গাছ দ্রুত ফল দিতে শুরু করে।
চারা রোপণের দূরত্ব:
গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ৩-৪ মিটার রাখা উচিত।
সারির মধ্যে ৪-৫ মিটার ফাঁকা রাখা ভালো।
গর্ত তৈরি ও সার প্রয়োগ
গর্তের আকার: ৫০×৫০×৫০ সেমি।
গর্তে সার মিশিয়ে রাখা:
৫ কেজি গোবর সার
২০০ গ্রাম টিএসপি
১০০ গ্রাম এমওপি সার
গর্তে সার মিশিয়ে ৭-১০ দিন রেখে দিতে হবে।
৪. সেচ ও পানি সরবরাহ
গাছের চারপাশে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা বজায় রাখতে হবে।
শুকনো মৌসুমে সপ্তাহে ২-৩ বার পানি দিতে হবে।
বর্ষার সময় পানি জমে থাকলে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. সার প্রয়োগ
প্রতি ৩ মাস অন্তর জৈব সার (কম্পোস্ট/গোবর সার) প্রয়োগ করা ভালো।
রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হলে:
ইউরিয়া: ২০০-৩০০ গ্রাম/গাছ
টিএসপি: ১৫০-২০০ গ্রাম/গাছ
এমওপি: ২০০-২৫০ গ্রাম/গাছ
সালফার ও ম্যাগনেসিয়াম প্রতি ৬ মাস অন্তর স্প্রে করলে ফলের মান ভালো হয়।
৬. রোগবালাই ও প্রতিরোধ
সাইট্রাস ক্যানকার: পাতায় দাগ পড়লে তামা ভিত্তিক ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে।
থ্রিপস ও এফিড আক্রমণ: কীটনাশক বা নিম তেল স্প্রে করলে পোকা দমন করা যায়।
শিকড় পচা রোগ: অতিরিক্ত পানি জমলে এ সমস্যা হয়, তাই নিষ্কাশন ব্যবস্থা ঠিক রাখতে হবে।
ফল সংগ্রহ ও ব্যবহার
পরিপক্ব ফল সাধারণত গাছে ৭-১০ মাসের মধ্যে সংগ্রহযোগ্য হয়।
মাল্টা কাঁচা ও পাকা দুইভাবেই খাওয়া যায়।
এটি জুস, স্মুদি, সালাদ, ডেজার্ট ও কেক তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
উপসংহার
হলুদ মাল্টা একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল, যা বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক। এটি সহজ পরিচর্যায় দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং ফলন ভালো হয়। যারা বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ করতে চান, তাদের জন্য হলুদ মাল্টা একটি চমৎকার বিকল্প।
Know More Details Just Call- 01861543144
Got Nursery Related Tips and Trikes Please Join Our Facebook Group
Reviews
There are no reviews yet.