Description
Nashpati Fruit Plant
নাশপাতি: উপকারিতা, চারা লাগানোর নিয়ম ও পরিচর্যা
নাশপাতির পরিচিতি
নাশপাতি (Pear) একটি সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও রসালো ফল। এটি প্রধানত শীতপ্রধান অঞ্চলে ভালো জন্মায়, তবে কিছু জাত উষ্ণ আবহাওয়াতেও চাষ করা যায়। নাশপাতির গাছ সাধারণত ১০-১৫ মিটার উঁচু হয় এবং দীর্ঘকাল বেঁচে থাকে।
- বৈজ্ঞানিক নাম: Pyrus communis
- পরিবার: Rosaceae
- উৎপত্তি: ইউরোপ ও এশিয়া
- আকার ও রঙ: সাধারণত লম্বাটে ও সবুজাভ-হলুদ রঙের
- স্বাদ: মিষ্টি, রসালো এবং হালকা টক-মিষ্টি
নাশপাতির উপকারিতা
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
নাশপাতিতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ঠান্ডা-সর্দি প্রতিরোধে সহায়ক।
২. হজমশক্তি উন্নত করে
এতে প্রচুর ডায়াটারি ফাইবার রয়েছে, যা হজমশক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
৩. হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে
নাশপাতিতে থাকা পটাশিয়াম ও ফ্ল্যাভোনয়েড রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা দেয়।
৪. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
নাশপাতিতে লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) থাকার কারণে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে।
৫. ওজন কমাতে সাহায্য করে
ফাইবার ও কম ক্যালোরিযুক্ত এই ফল ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ওজন কমাতে সহায়ক।
৬. ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী
নাশপাতিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ই ত্বক উজ্জ্বল রাখে এবং চুলের বৃদ্ধি বাড়ায়।
৭. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক
এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোকেমিক্যাল ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
নাশপাতির চারা লাগানোর নিয়ম
১. উপযুক্ত মাটির ধরন
- উর্বর দোআঁশ বা বেলে-দোআঁশ মাটি সবচেয়ে ভালো।
- মাটির pH ৬.০-৭.০ হওয়া উচিত।
- ভালো পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
২. চারা লাগানোর সময় ও পদ্ধতি
- শীতপ্রধান অঞ্চলে বসন্ত বা শরৎকাল চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়।
- প্রতি গাছের জন্য ৮-১০ ফুট দূরত্ব রাখতে হবে।
- গর্তের মাপ ২-৩ ফুট গভীর ও প্রশস্ত হওয়া উচিত।
- চারা রোপণের সময় কম্পোস্ট বা জৈব সার মিশিয়ে দিতে হবে।
৩. সেচ ব্যবস্থা
- গ্রীষ্মকালে প্রতি ৭-১০ দিন অন্তর পানি দিতে হবে।
- বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি যাতে না জমে, সেজন্য ভালো নিষ্কাশন ব্যবস্থা রাখতে হবে।
- ফল ধরার সময় নিয়মিত সেচ দিলে ফলের আকার ও স্বাদ ভালো হয়।
৪. সার ব্যবস্থাপনা
- প্রতি গাছের জন্য ১০-১৫ কেজি জৈব সার (কম্পোস্ট বা গোবর সার) দিতে হবে।
- প্রতি ৩ মাস অন্তর ১৫০-২০০ গ্রাম ইউরিয়া, ১৫০ গ্রাম টিএসপি ও ১০০ গ্রাম পটাশ সার প্রয়োগ করতে হবে।
- ফলন বৃদ্ধির জন্য বোরন ও জিঙ্ক সার প্রয়োগ করা যেতে পারে।
নাশপাতি গাছের পরিচর্যা
১. আগাছা ও ছাঁটাই
- গাছের চারপাশের আগাছা পরিষ্কার রাখতে হবে।
- পুরনো ও রোগাক্রান্ত ডাল কেটে ফেলতে হবে, যাতে নতুন ডাল দ্রুত গজায়।
- গাছের শাখাগুলো ছেঁটে দিলে ফলন ভালো হয়।
২. রোগবালাই ও পোকামাকড় দমন
- ফাঙ্গাসজনিত রোগ, পাতা পচা ও ফল পচা সমস্যা হতে পারে, যা ছত্রাকনাশক স্প্রে করে প্রতিরোধ করা যায়।
- থ্রিপস, মিলিবাগ ও অ্যাফিডের আক্রমণ প্রতিরোধে নিম তেল বা জৈব কীটনাশক ব্যবহার করা ভালো।
৩. পরাগায়ন ও ফল ধরানো
- নাশপাতি গাছে ফল ধরার জন্য পরাগায়ন প্রয়োজন।
- মৌমাছির মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরাগায়ন ঘটে, তবে কৃত্রিম পরাগায়নের মাধ্যমে ফলন বাড়ানো যায়।
- ফুল ও ফল আসার সময় পর্যাপ্ত পানি ও সার দিলে ফলন ভালো হবে।
৪. ফল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ
- ফুল আসার ৩-৫ মাসের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়।
- ফল যখন হালকা হলুদ বা সবুজাভ রঙ ধারণ করে এবং স্পর্শে নরম হয়, তখন এটি পাকার উপযুক্ত হয়।
- সংগ্রহের পর নাশপাতি সাধারণত ১-২ সপ্তাহ সংরক্ষণ করা যায়।
উপসংহার
নাশপাতি একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল, যা শরীরের জন্য উপকারী। এটি সহজেই চাষ করা যায় এবং সঠিক পরিচর্যা করলে ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব। বাণিজ্যিকভাবে নাশপাতি চাষ লাভজনক হতে পারে এবং এটি তাজা ফল, জুস ও সংরক্ষিত খাবারে ব্যবহৃত হয়।
Know More Details Just Call- 01861543144
Got Nursery Related Tips and Trikes Please Join Our Facebook Group
Reviews
There are no reviews yet.