Description
Hazari Jackfruit Plant
হাজারী কাঁঠাল: উপকারিতা, গাছ লাগানোর নিয়ম ও পরিচর্যা
হাজারী কাঁঠাল বাংলাদেশের একটি উন্নত জাতের কাঁঠাল, যা উচ্চ ফলনশীল, সুস্বাদু ও বড় আকারের হয়ে থাকে। এটি মূলত নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ ও আশপাশের জেলায় বেশি চাষ হয়। এই জাতের কাঁঠাল সাধারণত বড়, রসালো এবং মিষ্টি হয়। বাণিজ্যিকভাবে চাষ করলে এটি অত্যন্ত লাভজনক হতে পারে।
হাজারী কাঁঠালের উপকারিতা
১. পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ
- ভিটামিন A, C ও B-কমপ্লেক্স: এটি চোখের জন্য ভালো এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
- আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড: রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে এবং রক্ত গঠনে সহায়তা করে।
- ফাইবার: হজমশক্তি বাড়ায় ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
2. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক
- এতে থাকা ফাইবার হজমশক্তি উন্নত করে এবং পাকস্থলীর জন্য উপকারী।
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
- উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ক্ষতিকর টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।
- ঠান্ডা-সর্দি প্রতিরোধে কার্যকরী।
৪. হার্টের জন্য উপকারী
- কোলেস্টেরল কমায় এবং রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে।
- হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
৫. ত্বক ও চুলের যত্নে সহায়ক
- এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে উজ্জ্বল রাখে।
- চুলের বৃদ্ধি বাড়ায় এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।
হাজারী কাঁঠাল গাছ লাগানোর নিয়ম
১. উপযুক্ত জলবায়ু ও মাটি
- উষ্ণ ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ুতে ভালো জন্মে।
- দোআঁশ বা বেলে-দোআঁশ মাটি সবচেয়ে ভালো।
- pH ৬-৭ হলে সর্বোত্তম ফলন পাওয়া যায়।
- পানি জমে না থাকে এমন উঁচু জায়গায় চাষ করা ভালো।
২. চারা লাগানোর সময়
- যেকোনো সময় গাছ লাগানো যায়।
- তবে নিয়মিত পানি দিতে হবে।
- টবে বা মাঠে লাগানো যায়।
৩. চারা বা কলম নির্বাচন
- কাঁঠাল বীজ থেকে চারা তৈরি করা যায়, তবে গ্রাফটিং বা কলম করা চারা দ্রুত ফল দেয়।
- সুস্থ ও রোগমুক্ত চারা নির্বাচন করা উচিত।
৪. গর্ত তৈরি ও সার প্রয়োগ
- গর্তের আকার: ৩-৪ ফুট গভীর ও ৩-৪ ফুট প্রশস্ত।
- সার মিশ্রণ:
- ১০-১৫ কেজি গোবর সার
- ৫০০ গ্রাম সুপার ফসফেট
- ২৫০ গ্রাম পটাশ
- ১০০ গ্রাম চুন
৫. চারা রোপণের পদ্ধতি
- চারা রোপণের পর গোড়ায় ভালোভাবে মাটি চেপে দিতে হবে।
- প্রথম ৩-৪ মাস নিয়মিত পানি দিতে হবে।
- চারার পাশে খুঁটি দিলে ঝড়ে ক্ষতি কম হবে।
হাজারী কাঁঠাল গাছের পরিচর্যা
১. সেচ ব্যবস্থা
- গ্রীষ্মকালে প্রতি ৭-১০ দিনে একবার পানি দিতে হবে।
- বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
- ফুল ও ফল ধরার সময় সঠিক মাত্রায় পানি সরবরাহ করতে হবে।
২. সার প্রয়োগ
- প্রতি বছর:
- ১৫-২০ কেজি গোবর সার
- ১ কেজি ইউরিয়া
- ৫০০ গ্রাম সুপার ফসফেট
- ৪০০ গ্রাম মিউরিয়েট অব পটাশ
- ফুল ধরার সময় ও ফল আসার আগে:
- পটাশ ও ফসফরাস বেশি প্রয়োগ করা উচিত।
- ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক ও বোরন স্প্রে করলে ফলন ভালো হয়।
৩. আগাছা ও মালচিং
- নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
- গাছের গোড়ায় খড় বা শুকনো পাতা দিয়ে মালচিং করলে মাটির আর্দ্রতা বজায় থাকবে।
৪. গাছ ছাঁটাই (Pruning)
- গাছের অপ্রয়োজনীয় শাখা ছাঁটাই করলে দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
- রোগাক্রান্ত ও শুকনো ডালপালা কেটে ফেলতে হবে।
হাজারী কাঁঠাল গাছের রোগ ও প্রতিকার
১. ফল পচা রোগ
- লক্ষণ: ফলের গায়ে বাদামি বা কালো দাগ পড়ে।
- প্রতিকার: বোর্দো মিশ্রণ বা কপার অক্সিক্লোরাইড স্প্রে করুন।
২. গুঁড়ি পচা রোগ
- লক্ষণ: গাছের গোড়া থেকে পচন ধরে ও গাছ মরে যেতে পারে।
- প্রতিকার: ছত্রাকনাশক প্রয়োগ ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন।
৩. পোকামাকড়ের আক্রমণ
- কাঁঠাল মাছি: ফলের ভেতরে ঢুকে নষ্ট করে।
- প্রতিকার: ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করুন।
- পাতা মোড়ানো পোকা: পাতাগুলো কুঁচকে যায়।
- প্রতিকার: নিম তেল বা কীটনাশক স্প্রে করুন।
ফল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ
- চারা লাগানোর ৩-৫ বছরের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে।
- মে-জুলাই মাসে ফল সংগ্রহের উপযুক্ত সময়।
- পরিপক্ব কাঁঠালের গায়ের রং পরিবর্তন হয়ে কিছুটা হলুদ হয়ে যায়।
- সংগ্রহের পর ৭-১০ দিন ভালো থাকে, তবে ফ্রিজে সংরক্ষণ করলে ২-৩ সপ্তাহ ভালো থাকে।
উপসংহার
হাজারী কাঁঠাল উচ্চ ফলনশীল এবং স্বাদে উৎকৃষ্ট মানের হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য খুবই লাভজনক। সঠিক পরিচর্যা করলে এটি দীর্ঘমেয়াদী ফলন দিতে পারে এবং কৃষকদের জন্য ভালো বিনিয়োগ হতে পারে।
Know More Details Just Call- 01861543144
Got Nursery Related Tips and Trikes Please Join Our Facebook Group
Reviews
There are no reviews yet.