Description
Thai Bael Fruit Tree
বেল ফলের উপকারিতা, গাছ লাগানোর নিয়ম ও পরিচর্যা
বেল (Aegle marmelos) একটি উপকারী ফল, যা বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি বিশেষ করে হজমের সমস্যা, ডায়াবেটিস ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য উপকারী। বেলের গাছ শক্ত, দীর্ঘজীবী এবং কম যত্নেই ভালোভাবে বেড়ে ওঠে। এটি গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ায় ভালো জন্মে এবং ফলন দেয়।
বেল ফলের উপকারিতা
১. হজমশক্তি বৃদ্ধি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
- বেলে থাকা ডায়েটারি ফাইবার ও ট্যানিন হজমের সমস্যা দূর করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।
- এটি অ্যাসিডিটি ও পেটের গ্যাস কমায়।
২. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
- বেল পাতা ও ফলের নির্যাস রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- এতে প্রচুর ভিটামিন C ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
৪. লিভার ও কিডনির জন্য উপকারী
- বেল প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ার হিসেবে কাজ করে, যা লিভার ও কিডনি সুস্থ রাখে।
৫. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
- বেল রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
৬. ঠান্ডা-কাশি ও গলা ব্যথায় সহায়ক
- বেলের শরবত ঠান্ডা, কাশি ও গলা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
৭. ত্বক ও চুলের যত্নে উপকারী
- এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন A ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং চুল পড়া কমায়।
বেল গাছ লাগানোর নিয়ম
১. মাটির ধরন ও প্রস্তুতি
- বেলে দোআঁশ, বেলে-দোআঁশ ও লাল মাটিতে ভালো হয়।
- মাটির pH ৫.৫-৭.৫ হলে গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
- জমি ভালোভাবে চাষ ও আগাছা পরিষ্কার করে নিতে হবে।
২. চারা রোপণের উপযুক্ত সময়
- গ্রীষ্ম ও বর্ষাকাল (মার্চ-আগস্ট) চারা লাগানোর জন্য উপযুক্ত সময়।
৩. চারা লাগানোর নিয়ম
- বীজ, কলম বা কাটিং পদ্ধতিতে চারা তৈরি করা যায়, তবে কলমের চারা দ্রুত ফল দেয়।
- ২-৩ ফুট গভীর ও ৩-৪ ফুট প্রশস্ত গর্ত তৈরি করতে হবে।
- প্রতি গর্তে কম্পোস্ট, গোবর সার ও জৈব সার মিশিয়ে মাটি প্রস্তুত করতে হবে।
- গাছের পর্যাপ্ত বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে প্রতিটি গাছের মধ্যে ১৫-২০ ফুট দূরত্ব রাখতে হবে।
বেল গাছের পরিচর্যা
১. পানি দেওয়া
- প্রথম ৩-৪ মাস সপ্তাহে ২-৩ বার পানি দিতে হবে।
- গ্রীষ্মকালে বেশি পানি প্রয়োজন, তবে অতিরিক্ত পানি জমতে দেওয়া যাবে না।
- বর্ষাকালে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতই যথেষ্ট।
২. সার প্রয়োগ
- প্রতি গাছে বছরে ২-৩ বার নিম্নলিখিত সার প্রয়োগ করা উচিত—
- জৈব সার: কম্পোস্ট, গোবর সার
- রাসায়নিক সার: ইউরিয়া (২০০-৩০০ গ্রাম), টিএসপি (২০০-৩০০ গ্রাম), পটাশ (২০০-৩০০ গ্রাম)
৩. গাছ ছাঁটাই
- নতুন শাখা গজানোর জন্য পুরনো ও শুকনো ডাল ছাঁটাই করা উচিত।
- গাছের আকার ঠিক রাখতে বছরে ১-২ বার হালকা ছাঁটাই করা ভালো।
৪. রোগ ও পোকামাকড় দমন
- গাছের ছত্রাকজনিত রোগ প্রতিরোধে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করা দরকার।
- পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ হলে কীটনাশক বা জৈবিক স্প্রে (নিম তেল, রসুনের নির্যাস) ব্যবহার করতে হবে।
- গাছের নিচের শুকনো পাতা ও আগাছা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
ফল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ
- বেল ফুল আসার ৭-৮ মাস পর ফল সংগ্রহ করা যায়।
- ফল যখন কাঠের মতো শক্ত হয় ও হালকা ফাটল দেখা দেয়, তখন এটি সংগ্রহ করতে হয়।
- বেল শুকনো ও ঠান্ডা স্থানে কয়েক সপ্তাহ সংরক্ষণ করা যায়।
- এটি দিয়ে শরবত, মোরব্বা ও আচার তৈরি করা যায়।
উপসংহার
বেল একটি উপকারী ফল, যা সহজেই বাগানে বা বাড়ির আঙিনায় চাষ করা যায়। এটি দীর্ঘজীবী গাছ এবং কম যত্নেই ভালো ফলন দেয়। সঠিক পরিচর্যা করলে একেকটি গাছ থেকে ৩০-৫০ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া সম্ভব। এটি শুধু স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়, বাণিজ্যিকভাবেও লাভজনক একটি ফল।
Know More Details Just Call- 01861543144
Please visit our facebook page
Reviews
There are no reviews yet.