Description
Sagor Banana Tree Plant Nepal
সাগর কলা: উপকারিতা, চাষের নিয়ম ও পরিচর্যা
সাগর কলা বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও সুস্বাদু কলার জাত। এটি খেতে মিষ্টি, নরম ও সুমিষ্ট গন্ধযুক্ত। এর চাষ সহজ, উৎপাদন বেশি এবং সংরক্ষণও তুলনামূলক দীর্ঘস্থায়ী, যা কৃষকদের জন্য লাভজনক।
১. সাগর কলার উপকারিতা
স্বাস্থ্যগত উপকারিতা:
পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ – এতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন B6, ভিটামিন C, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ফাইবার রয়েছে।
শক্তি বৃদ্ধি করে – প্রাকৃতিক চিনি (গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, সুক্রোজ) থাকায় এটি দ্রুত শক্তি জোগায়।
হজমশক্তি বাড়ায় – ফাইবার থাকার কারণে এটি হজমে সহায়ক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে – উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম থাকায় এটি উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় – এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস হৃদরোগ প্রতিরোধ করে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সহায়ক – সাগর কলার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ করে – ফাইবার থাকার কারণে এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে, ফলে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের প্রবণতা কমে যায়।
অর্থনৈতিক উপকারিতা:
উচ্চ ফলনশীল – প্রতি একরে প্রচুর উৎপাদন হয়, যা কৃষকদের জন্য লাভজনক।
বাজারদর ভালো – সারা বছর চাহিদা থাকে এবং সহজেই বিক্রি করা যায়।
দ্রুত বিকাশ ঘটে – চারা রোপণের ৮-১০ মাসের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়।
সংরক্ষণ সুবিধাজনক – অন্যান্য কলার তুলনায় এটি দীর্ঘদিন ভালো থাকে।
২. সাগর কলার চারা রোপণের নিয়ম
ক) উপযুক্ত মাটি ও জলবায়ু
উর্বর দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি সাগর কলার জন্য উপযুক্ত।
মাঝারি আর্দ্রতা সম্পন্ন উষ্ণ জলবায়ুতে ভালো ফলন হয়।
পর্যাপ্ত রোদ ও সঠিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা থাকা জরুরি।
২০-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সেরা ফলন হয়।
খ) চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়
সাধারণত বর্ষা মৌসুমের (জুন-আগস্ট) শেষ ও শীতের শুরুতে (অক্টোবর-নভেম্বর) রোপণ করা ভালো।
গ) চারা রোপণের পদ্ধতি
গর্ত তৈরি: ১.৫-২ ফুট গভীর ও ২-৩ ফুট চওড়া গর্ত করুন।
সার প্রয়োগ:
- ১০-১২ কেজি গোবর সার
- ২০০-২৫০ গ্রাম ইউরিয়া
- ২০০ গ্রাম টিএসপি
- ২০০ গ্রাম এমওপি
চারা বসানো: - সুস্থ ও রোগমুক্ত চারা নির্বাচন করে গর্তে বসান।
- মাটি দিয়ে চারপাশ চেপে দিন এবং পর্যাপ্ত পানি দিন।
দূরত্ব: - গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ৬-৮ ফুট রাখা উচিত।
৩. সাগর কলার পরিচর্যা
ক) পানি সেচ
শুষ্ক মৌসুমে প্রতি ৭-১০ দিন অন্তর সেচ দিতে হবে।
বর্ষায় অতিরিক্ত পানি জমতে না দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
ফুল ও ফল আসার সময় বেশি পানি দেওয়া দরকার।
খ) সার প্রয়োগ
প্রতি বছর সার প্রয়োগ করুন:
- গোবর সার: ১৫-২০ কেজি
- ইউরিয়া: ৩০০-৩৫০ গ্রাম
- টিএসপি: ২৫০-৩০০ গ্রাম
- এমওপি: ২০০-২৫০ গ্রাম
সার প্রয়োগের সময়:
- রোপণের ১ মাস পর প্রথমবার সার দিন।
- প্রতি ২-৩ মাস অন্তর সার প্রয়োগ করুন।
- কলা ধরার সময় বাড়তি পটাশ সার দিলে ফলন ভালো হয়।
গ) রোগ ও পোকামাকড় দমন
পাতা পচা রোগ:
- ট্রাইকোডার্মা বা কপার অক্সিক্লোরাইড স্প্রে করুন।
ফল ছিদ্রকারী পোকা:
- প্রতি ১৫ দিন অন্তর ৫ মিলি ডেসিস বা সুমিথিয়ন ১ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে স্প্রে করুন।
ছত্রাকজনিত রোগ:
- প্রতি মাসে ১ বার বোর্দো মিশ্রণ (১%) বা কপার অক্সিক্লোরাইড স্প্রে করতে হবে।
নেমাটোড (শিকড় পচা রোগ):
- মাটিতে ফুরাডান ৫জি (প্রতি গাছের গোড়ায় ৫-১০ গ্রাম) প্রয়োগ করতে হবে।
ঘ) গাছের পরিচর্যা ও ছাঁটাই
শুকনো ও আক্রান্ত পাতা কেটে ফেলুন।
গাছের গোড়ায় ঘাস বা আগাছা জন্মালে নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
বাতাস চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় দূরত্ব বজায় রাখুন।
৪. সাগর কলার সংগ্রহ ও সংরক্ষণ
রোপণের ৮-১০ মাসের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়।
কলার খোসা সবুজ থেকে হলুদাভ হলে সংগ্রহের উপযুক্ত সময়।
ফল সংগ্রহের পর ঠাণ্ডা ও ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে।
বাজারজাত করার আগে কলা পরিষ্কার করে ঝুড়িতে রাখতে হবে।
উপসংহার
সাগর কলা একটি উচ্চফলনশীল, লাভজনক ও সহজে চাষযোগ্য ফল। সঠিক পরিচর্যা ও সার ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করলে কৃষকরা বাম্পার ফলন পেতে পারেন। এটি শুধু খাওয়ার জন্য নয়, রপ্তানির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ।
আপনি কি সাগর কলার চাষ করতে চান? অথবা কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে চান? আমাকে জানান!
Know More Details Just Call- 01861543144
Got Nursery Related Tips and Trikes Please Join Our Facebook Group
Reviews
There are no reviews yet.